ত্বকে যতো রকম অ্যালার্জি হয় তার মধ্যে আর্টিকেরিয়া অন্যতম। আর্টিকেরিয়াকে অবশ্য আমবাতও বলা হয়। এটা হলে শরীর খুব চুলকায় এবং চাকা চাকা হয়ে লাল হয়ে ওঠে।
চাকা চাকা হওয়া ফুলে যাওয়া অংশগুলো কয়েক মিলিমিটার থেকে শুরু করে সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আর্টিকেরিয়া বা আমবাত শুধু শরীরের বাইরেই হয় না, শরীরের ভেতরেও হতে পারে।
শরীরে ভেতরে বলতে ঠোঁটে বা চোখের ভেতরে হতে পারে। তখন এক ভীষণরকম বিরক্তির প্রভাব পড়ে। কখনো যদি এটা শ্বাসনালীর ভেতরে হয় তখন তাকে বলা হয় অ্যানজিও-ইডিমা। এটা হলে শ্বাসনালীর ভেতরে যে পাতলা পদার্থের আবরণ থাকে তা ফুলে ওঠে। এর ফলে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
প্রকারভেদ:
(ক) একিউট আর্টিকেরিয়া: এতে খুব দ্রুত উপসর্গগুলো দেখা যায়, আবার খুব দ্রুতই মিলিয়ে যায়। সাধারণত ৬ সপ্তাহের কমই থাকে এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রেই এটা একটু বেশি হয়ে থাকে।
(খ) ক্রনিক আর্টিকেরিয়া: বার বার হয়ে থাকে এবং ৬ সপ্তাহের বেশি; কারও কারও ক্ষেত্রে মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছরও চলতে থাকে। ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট কোন কারন খুঁজে পাওয়া যায় না।
সম্ভাব্য অন্যান্য কারনসমূহ:
খাবার: বিশেষ করে গরুর গোশত, চিংড়ি, ইলিশ, বেগুন, কুমড়া, কচু এবং ওষুধ থেকে, অ্যান্ডোক্রাইন রোগে কোলাজেন ভাসকুলার রোগে, ডার্মোগ্রাফিজম, সূর্যরশ্মিতে, কম্পন, কলিনার্জিক বা পানির সংস্পর্শে ইত্যাদি।
অ্যালার্জি পরীক্ষা: আর্টিকেরিয়া বা আমবাতের প্রধান পরীক্ষাই হলো অ্যালার্জি পরীক্ষা। এতে রোগীর কোন জিনিসে অ্যালার্জি তা নির্ণয় হয়।
এলারজেন পরিহার: যখন অ্যালার্জির সুনির্দিষ্ট কারন খুঁজে পাওয়া যায় তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সুতরাং এ ধরনের কারন খুঁজে পাওয়া মাত্রই পরিহার করতে পারে।
ঔষধ প্রয়োগ: অ্যালার্জি ভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে অ্যালার্জির উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি ভ্যাকসিন বা ইমিউনোথেরাপি: অ্যালার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ঔষধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিশেষ করে যখন মাইট দ্বারা ক্রনিক আর্টিকেরিয়া হয়। আগে ধারণা ছিল অ্যালার্জি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।
উন্নত দেশের সব প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ভ্যাকসিন চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই রয়েছে। সুতরাং একটু সচেতন হলেই আর্টিকেরিয়া বা আমবাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই সব ধরণের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: কানে পুঁজ হওয়ার কারন ও চিকিৎসা