হেড লাইনটি নিশ্চয়ই পড়েছেন। আমরা বলতে এখানে পৃথিবীর সকল মানুষের কথা বলেছি। শুধু বাংলাদেশের কথা বলিনি। সুতরাং শুধু বাংলাদেশ মনে করে আমাকে দোষারোপ করবেন না আশা করছি।
এটা কেবল আমারই মন্তব্য। অন্য কারোর সাথে আমার যুক্তি ও কথন নাও মিলতে পারে। তাই শুরুতেই যদি আপনার মনে হয় এই লিখা আপনার জন্য তাহলে পড়া বাদ দেন। অযথা সময় নষ্ট করার দরকার নেই।
এই লিখার কলেবর অনেক বড়। তাই আপনার পড়তে সময় লাগবে। তবে ধৈর্য ধরে পড়লেই কেবল আমার লিখার মর্ম বুঝতে পারবেন। ইসলাম সম্পর্কে যাদের চুলকানি আছে তারাও এই লিখাটিকে স্কিপ করে যেতে পারেন। কারণ, এখানে ইসলামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু কথা বলা হয়েছে।
পৃথিবী আজ অনেক উন্নত। তার মানে, আমরা মানুষ’রাও উন্নত হয়েছি। কারণ, পৃথিবী তো আর নিজে নিজে উন্নত হয়নি। আমরা মানুষ’রা তাকে উন্নত করেছি। কিন্তু পৃথিবী উন্নত করার সাথে সাথে আমরা নিজেদেরকে আমুল পরিবর্তন করেছি।
এই আমুল পরিবর্তনের মধ্যে অনেক ভালোও রয়েছে আবার অনেক খারাপও রয়েছে। কেন ও কিভাবে খারাপটা হলো এবং সেগুলো কি তা নিয়েই মূলত আমার আলোচনা। আগেই বলে নিচ্ছি, আমি যেহেতু একজন মুসলিম ঘরের সন্তান তাই আমার লেখায় ইসলামের সামঞ্জস্য থাকবে – এটাই স্বাভাবিক।
শুরুতেই আমি বলতে চাই, শালীনতার কথা। আসলে শালীনতা বলতে আমরা কি বুঝি? শালীনতা শব্দের যতগুলো অর্থ রয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো নিজের শরীর ঠিকভাবে ঢেকে রাখা।
নিজের শরীর ঠিকভাবে ঢেকে রাখার মধ্যে তো খারাপ কিছু নেই। তাহলে আমরা ঢাকি না কেন? এটার কারণ হলো আমরা উন্নত হয়ে গেছি। আর উন্নত হলে খোলামেলা পোশাকে চলতে হবে এটাই স্বাভাবিক।
আপনি যদি পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তাকান তাহলে কি দেখতে পাবেন! দেখতে পাবেন সেখানে সব কিছু একদমই খোলামেলা। মেয়েরা কোন ধরণের পোশাকের ক্ষেত্রে বাচ-বিচার মানে না। তারা যে পোশাক ইচ্ছা সেটাই পড়ছে এতে তাদের সব কিছু দেখা গেলেও সমস্যা নেই।
খোলামেলা পোশাক ব্যবস্থা মধ্যযুগে হয়তো এতোটা ছিলো না। মানুষ তখন নিজেকে ঢেকে রাখতো। কিন্তু এখন তার বিপরীত অবস্থা আমরা দেখতে পাই।
তাহলে খুব সহজ ভাষায় বলা যায় যে, আমরা উন্নত হওয়ার সাথে অসভ্যও হয়ে যাচ্ছি। খোলামেলা পোশাক যদি অসভ্যতার মধ্যে না পড়ে বলে আপনার মনে হয় তাহলে এটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত অভিমত। কিন্তু আমার কাছে আমি যা বলেছি তাই সঠিক।
দ্বিতীয় পয়েন্টে আসা যাক। বাংলাদেশের বর্তমান মুসলিম বাচ্চাদের কথা বলি। খুব কম সংখ্যক উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরাই বড়দের বর্তমানে সম্মান করে।
আপনার বয়স ধরে নিলাম ৩৫ বছর। আপনি একটি চায়ের দোকানে গেলেন। সেখানে আপনি চা পান করছেন। অন্যদিকে, কিছুক্ষণ পরে সেখানে ১৫ বছরের ২ জন বালক আসলো। আপনার সামনেই দোকান থেকে সিগারেট কিনলো এবং আপনার সামনেই টানছে।
আপনি শুধু ব্যাপারটিকে দেখতে পারবেন কিন্তু কিছু বলতে পারবেন না। বললেই তারাই আপনার সাথে মারামারি শুরু করবে। মা-বাবা আসার প্রয়োজন পড়বে না। তাহলে একবার ভাবুন, আমরা উন্নত হয়েছি ঠিকই কিন্তু বিবেক কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে!
তারপর বৈশ্বিক একটি অবস্থার কথা বলি। যেকোন উদ্ভাবন কিংবা প্রযুক্তি যা নতুন আবিষ্কার হয়েছে (আসলে কোন কিছুই আবিষ্কার হয় না। আল্লাহ তায়ালা সব কিছুই দুনিয়াতে দিয়ে দিয়েছেন। মানুষ শুধুমাত্র খুঁজে বের করে) তা যেন আমাদের ভালো কাজেই লাগে। যদি মন্দ কাজে লাগে তাহলে সে আবিষ্কারের আমাদের প্রয়োজন নেই।
হ্যা, এখানে একটি ব্যাপার আছে। সেটা হলো- কোনো কোনো আবিষ্কার আমাদের ভালো-মন্দ দুটো কাজেই লাগে। তাহলে মন্দটা যেন না হয় সেই ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকা উচিত।
কিন্তু আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, বর্তমান পৃথিবীতে কেবল দূর্বল এর উপর সবলের অত্যাচার চলছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি। আগে হাতি-ঘোড়া দিয়ে আক্রমণ করতো আর এখন আক্রমণ করে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে।
তাহলে এই পারমানবিক অস্ত্র আবিষ্কার করে আমাদের কি লাভ হলো? দোষ কি পারমাণবিক অস্ত্রের? কখনোই না। দোষ আমাদের। আমরা মানুষ’রা অসভ্য হয়ে যাচ্ছি আর তাই এই পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে দূর্বলের উপর সবলের অত্যাচার নিজ চোখে পরিদর্শন করছি।
এটাকে আপনি থামাতে পারবেন না। কারণ, কোনো জাতিই যেন আর সভ্য নেই। যার যার শক্তি দিয়ে অন্যকে আঘাত করার চেষ্টা করছে। আমরা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছি। আমাদের ধ্বংস হয়তো অনিবার্য।
রাশিয়া ইউক্রেনের মতো ছোট দেশের উপর কিভাবে অত্যাচার করছে দেখুন। রাশিয়া যদি সভ্য জাতি হতো তারা কি এই অসভ্যতা ও বর্বরতার মতো কাজগুলো করতে পারতো!
অসংখ্য নীরিহ মানুষ তাদের বোমার আঘাতে মারা যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই, বলার কেউ নেই। অন্যান্য দেশগুলো শুধু উসকে দিচ্ছে। কিন্তু থামানোর মতো কেউ নেই। কারণ একটাই আর তা হলো – অসভ্য জাতি কখনো ভালো কাজ করতে পারে না। তারা শুধু মেয়েদেরকে উলঙ্গ করে নিয়ে নাচাতে পারে।